ফুলের পাপড়ি থেরাপিতে বন্ধ হলো যত্রতত্র প্রস্রাব করা

‘এখানে প্রস্রাব করবেন না। করলে ৫০০ টাকা জরিমানা। নির্দেশক্রমে কর্তৃপক্ষ।’ রাজধানীতে অহরহ এ রকম নির্দেশনা দেখা যায়। কিন্তু কে মানেন সে নির্দেশনা। এবার রাজধানীতে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে যত্রতত্র মানুষের প্রস্রাব করা বন্ধে একটি উদ্যোগ দেখা গেলো। আর এই উদ্যোগ কাজেও এসেছে। তবে জরিমানার ভয় দেখিয়ে নয়। ফুলের পাপড়ি থেরাপিতে পরিবেশের পরিবর্তন ঘটিয়ে যত্রতত্র মানুষের প্রস্রাব করা বন্ধ করানো গেছে।  
 
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন ফুটপাতের রাস্তায় চোখে পড়ে দুটি ব্ল্যাকবোর্ড। পাশে দড়িতে সাদা কাজগেও লেখা টানানো আছে। এর একটি ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা আছে- ‘পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য স্বেচ্ছায় শ্রম দেয়া হচ্ছে। ‘প্লিলিজ (প্লিজ) প্রসাব (প্রস্রাব) বা ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণ করবো না।  ধন্যবাদ’। যদিও ব্ল্যাকবোর্ডটিতে দুটি বানানে ভুল রয়েছে। তবে এমন লেখা পথচারীদের দৃষ্টি আর্কষণ করছে।
শুধু নোটিশটির কারণে দৃষ্টি আকর্ষিত হচ্ছে তা নয়, নোটিশটির নিচেই বেশ খানিকটা জায়গাজুড়ে হলুদ গাঁদাসহ বিভিন্ন ফুলের ছিটিয়ে রাখা পাপড়ির কারণে যে সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সেটাই দৃষ্টি আকর্ষণের মূল কারণ। 
 
রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও বাসের যাত্রীসহ পথচারী সবাই হঠাৎ করে ফুটপাতের পাশের জায়গাটি দেখে ছোট কোনো ফুলের বাগান মনে করছেন। যারা ফুটপাত দিয়ে হেটে যাচ্ছেন তারা ক্ষণিকের জন্য থমকে দাঁড়াচ্ছেন। 
সবাই দড়িতে ঝুলানো ভুল বানানে লিখা প্রস্রাব না করার নোটিশটির পাশেই অন্য ব্লাকবোর্ডে লেখা বাক্যগুলো দাঁড়িয়ে পড়ে শেষ করে তবেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে লেখা আছে ‘এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়া, এটা স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য চত্তর (চত্বর) এরিয়া, এখানে বাংলাদেশের সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদয়ন স্কুল এবং কলেজ রয়েছে- তাই এখানের পরিবেশ সুন্দর রাখা আমাদের কর্তব্য, ধন্যবাদ।’
 
কে বা কারা এ উদ্যোগটি নিয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে জানা  যায়নি। তবে ভুল বানানো লেখাগুলো দেখে সহজেই বুঝা যায় না বড় কোনো পরিবেশবাদী সংগঠন কিংবা উচ্চ শিক্ষিত কেউ এ উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।
এসএম হল সংলগ্ন ফুটপাতের এক চা-সিগারেট বিক্রেতা জানান, এ স্থানটিতে আগে প্রস্রাব ও ময়লা আবর্জনার দুগর্ন্ধে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করা যেত না। নাকেমুখে রুমাল চেপে পথ চলতে হতো। কিন্তু গত কিছুদিন যাবৎ কয়েকজন যুবক প্রতিদিন ফুলের পাপড়ি এনে ছিটিয়ে রাখছেন। ফলে কেউ আর এখানে প্রস্রাব করছেন না। প্রস্রাবের দুর্গন্ধের স্থানটিতে এখন ফুলেল সুবাতাস বইছে। যে বা যারাই এটি দেখছেন উদ্যোক্তাদের মনেপ্রাণে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।
SHARE

About Arifur Rahman

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 Post a Comment:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন