আব্দুল ওয়াহেদ সরদার |
বৃক্ষ
প্রেমিক হিসাবে তিনি পরিচিত। এক
যুগ ধরে নিজ অর্থায়নে
সরকারি জমিতে রোপন করছেন ফলজ
বৃক্ষ। তার লাগানো গাছে
ধরছে ফল। বৃক্ষ বিপ্লবের
এই নায়ক আব্দুল ওয়াহেদ
সরদার। তিনি যশোর সদর
উপজেলার সাড়াপোলের বাসিন্দা।
আব্দুল
ওয়াহেদ সরদার ২০০৪ সাল থেকে
বৃক্ষ রোপণ শুরু করেন।
এর পর গাছ লাগানের
নেশা তার পিছু ছাড়েনি।
১২ বছর যাবত তিনি
সরকারি পতিত জমি, রাস্তাঘাট
ও পুকুরপাড়ে গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন।
তার লাগানো আম গাছে ফল
ধরছে। যশোরের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও পতিত জমি
টার্গেট করে তিনি গাছ
লাগান । যশোর কালেক্টরেট
চত্তর,পুলিশ লাইন, কালেক্টরেট প্রাঙ্গণ, বেজপাড়ার আনছার ভিডিপির ক্যাম্প প্রাঙ্গন, স্টেডিয়ামপাড়ার মিতালী সংঘ সংলগ্ন এলাকা,
জেলা ট্রাফিক অফিস, চেকপোস্ট ও বিল হরিণার
শ্মশান সংলগ্ন জমিতে বেড়ে ওঠেছে তার
রোপনকৃত গাছ। এছাড়া শার্শা
উপজেলা বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, চৌগাছা ,মনিরামপুর ও অভয়নগরের থানা
প্রাঙ্গনের তিনি আম, কাঁঠাল,
লিচু, কামরাঙ্গাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চারা রোপন
করেছেন। এ বছর তিনি
সাড়াপোল-সাড়াগুটো সড়ক, র্যাব
অফিস চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রাড় সাড়ে তিন শতাধিক
আমের চারা রোপন করেছেন।
সদর
উপজেলার সাড়াপোল সড়কে আব্দুল ওয়াহেদের
রোপনকৃত প্রায় দেড় শতাধিক গাছে
ফল ধরছে। এছাড়া রামনগর ইউনিয়নের ৮টি সড়কের দু
পাশেই শোভা পাচ্ছে তার
রোপনকৃত বৃক্ষ। চাঁচড়া কালারহাট সড়কের ৯ কিলোমিটার এলাকা,
রুপদিয়া বিল হরিণা ও
সাড়াগুটো ৩ কিলোমিটার, সাড়াপোলে
২ কিলোমিটার ও রুপদিয়া বানিয়াবহু
সড়কের ৩ কিলোমিটার এলাকা
জুড়ে তার লাগানো গাছের
শাখা প্রশাখা বিস্তার করছে। রুপদিয়া, মথুরামপুর, সিরাজসিঙ্গা সড়কে তার রোপন
করা গাছের কোন হিসেব নেই।
বেশিরভাগ সড়কের আম ও লিচু
গাছে ধরছে ফল।
বৃক্ষের
প্রতি অনুরাগের কারনে আব্দুল ওয়াহেদ সরদার পেয়েছেন বৃক্ষ প্রেমিকের উপাধি। তার বৃক্ষ প্রীতির
কথা ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মুখে মুখে। সামান্য
একজন রাজমিস্ত্রীর কাজ করেও নিজ
অর্থায়নে গাছ লাগিয়ে অনন্য
দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। দারিদ্রতাকে পিছনে ফেলে প্রতি বছর
হাজার হাজার টাকার বৃক্ষ রোপন করে চলছেন।
বৃক্ষরোপন করেই যেন অজানা
কোন তৃপ্তি পান তিনি। সরকারি
দপ্তরে বৃক্ষরোপন করতে তাকে বিভিন্ন
প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসেছে
হাজারো বাঁধা। তারপরও তিনি হাল ছাড়েননি।
শুধু বৃক্ষরোপন করেই ক্ষান্ত হননি।
সে গুলোর দেখভাল ও পরিচর্যা করছেন।
তার মতে, বৃক্ষ হচ্ছে
একটা বোবা প্রানী। কথা
বলতে পারে না তাই
মানুষ বৃক্ষের সাথে নিষ্টুর আচরন
করে। আব্দুল ওয়াহেদ সরদার বলেন, ‘‘বৃক্ষ রোপন করতে যেয়ে
প্রতিনিয়ত তাকে সমস্যায় পড়তে
হয়। সরকারি দপ্তরে গাছ লাগানোর অনুমতি
সহজে মেলে না। কি
জন্য গাছ লাগাবেন তার
কৈয়িত দিতে হয় অফিসারদের
কাছে। তারপর অনুমতি মিললেও মানুষ শত্রুতা করে গাছের চারা
উপড়ে ফেলে। কেউ বুঝতে চাইনা
এই বোবা প্রানীর ভাষাটা।”
গাছের প্রতি তার গভীর সখ্যতার
কথা স্বীকার করে সদর উপজেলার
বেড়বাড়ি গ্রামের মিন্টু মিয়া বলেন, ‘‘আব্দুল
ওয়াহেদ সরদারের বৃক্ষরোপনের কথা এলাকার সবারই
জানা। গাছকে তিনি সন্তানের মত
করেই স্নেহ করেন। সারাক্ষন গাছের পরিচর্যা করে সময় কাটান।
0 Post a Comment:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন